আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হলো ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন

আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হলো ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন

আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হলো ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন

 আজারবাইজান,  ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন, বাকু,  ইরান, রাশিয়া,

গতকাল আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ইরান, আজারবাইজান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্মেলন অভিন্ন স্বার্থ ও লক্ষ্য উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নের যে কোনো উদ্যোগকে ইরান শুধু যে স্বাগত জানায় তাই নয় জাতিগুলোর অধিকার রক্ষা এবং বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য তেহরান বেশ  কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ সহিংসতামুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলা, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ মোকাবেলা এবং জাতিগুলোর মানবিয় ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষার জন্য ইরান জাতিসংঘে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছে।

বর্তমান বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সম্মেলনে দেয়া ভাষণে বলেছেন, বর্তমান বিশ্বে একটি দেশের পক্ষে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা এবং বিরাজমান সুযোগ সুবিধাগুলো ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সব দেশের জনগণের উন্নয়ন, সামাজিক সুযোগ সুবিধা ও শান্তির জন্য প্রয়োজন প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাকু সম্মেলন বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সঙ্গে এ অঞ্চলের সব দেশের ভাগ্য ও উন্নয়ন জড়িত। প্রথমত, এই সম্মেলন আঞ্চলিক সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করেছে। দ্বিতীয়ত, এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন সুদীর্ঘকাল ধরে যা কিনা বহুপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ এনে দিয়েছে। যেমন ইরান ও আজারবাইজানের মধ্যে রেল যোগাযোগ, উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে পণ্য পরিবহন করিডোর, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমঝোতার কথা উল্লেখ করা যায়। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, নানা ক্ষেত্রে এই তিন দেশের সহযোগিতা আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এমন সময় বাকু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন ধর্মের নামে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের বিস্তার, মাদকের ছড়াছড়ি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ কারণে কোনো দেশের একার পক্ষে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।

ইরান কাজেকর্মে এটা প্রমাণ করেছে, দ্বিপক্ষীয় কিংবা বহুপক্ষীয় সম্পর্কের মাধ্যমে তারা প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে আর্থ-রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। যেখানে সম্মিলিত প্রচেষ্টার দরকার সেখানেই ইরান তার আন্তরিকতা দেখিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরমাণু সংকট থেকে শুরু করে সিরিয়া সংকট পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই ইরান রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বজায় রেখেছে। বাকু সম্মেলন ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা বিস্তারের সুযোগ এনে দিয়েছে।  বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান, রাশিয়া ও আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টদের বৈঠক এ তিন দেশের মধ্যে আর্থ-রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিস্তারে বিরাট ভূমিকা রাখবে।  একই সঙ্গে বিরাজমান আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন