অষ্ট্রেলিয়ায় অজগরের খাদ্য হলো এক কুমির

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে জলচর এক অজগর সাপ সম্প্রতি ১ মিটার অর্থাৎ ৩.২ ফুট লম্বা কুমিরকে গিলে খেয়েছে। কুইন্সল্যান্ডের একটি লেকে এ ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন অনেকেই; অনেকে আবার ঘটনাটির ছবিও তুলে রেখেছেন।

অষ্ট্রেলিয়ায় অজগরের খাদ্য হলো এক কুমির
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে জলচর এক অজগর সাপ সম্প্রতি ১ মিটার অর্থাৎ ৩.২ ফুট লম্বা কুমিরকে গিলে খেয়েছে। কুইন্সল্যান্ডের একটি লেকে এ ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন অনেকেই; অনেকে আবার ঘটনাটির ছবিও তুলে রেখেছেন।

এ ঘটনায় অনেকে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেছেন। জলচর অজগর সাপের ভোজ্য তালিকায় সাধারণভাবে কুমির পড়ে না। এ জাতীয় সাপ সাধারণত ছোট প্রাণী দিয়ে উদরপূর্তি করে। ইঁদুর এদের একটি প্রিয় খাবার। হামলার মুখে কুমির প্রতিরোধ করতে জানে বলে কুমির ধরতে যাওয়া সাপের জন্য বিপদজনকও বটে। অবশ্য একবার গতিকে একটি কুমির গিলতে পারলে আর পাক্কা দুই মাস অজগরকে খাবারের ভাবনা ভাবতে হয় না!

অজগরের কুমির শিকারের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই বলেন, সচরাচর ইঁদুরকে গিলে খাওয়া অজগরের জন্য কোনো সমস্যা হয়ে দেখা দেয় না। তবে ইঁদুরের তুলনায় কুমির শিকার করতে গেলে বিপদের আশংকা বাড়ে।

কুমির গিলতে কুইন্সল্যান্ডের জলচর অজগর সাপের প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এ সময় সাপটিকে হামলা করতে পারত ডিঙ্গো বা বুনো কুকুর। সেক্ষেত্রে আত্মরক্ষার সুযোগ পেত না সাপটি।

এ ছাড়া, তাজা কুমির গেলার চেষ্টা করার সময় বিচিত্র বিপদ ঘটতে পারে। ২০০৫ সালে ফ্লোরিডায় একটি কুমির গেলার চেষ্টা করতে গিয়ে এমন প্রাণঘাতী বিপত্তিতে পড়েছিল এক অজগর। কুমির গেলার পর সাপটির পেট ফেটে যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন,অনেক বড় কুমির গেলার চেষ্টা করেছিল সাপটি। কিংবা কুমির গেলার সময় কোনো ধমনী ছিঁড়ে এমন বিপদ ঘটেছে সাপটির।

সাপের পরিপাকতন্ত্র সাধারণভাবে বন্ধ থাকে। খাবার পেটে ঢোকা মাত্র এ পরিপাকতন্ত্র দ্রুত সচল হয়ে ওঠে। এ সময় সর্পদেহের বিপাকক্রিয়া প্রচণ্ড বেড়ে যায়। সাধারণ আকারের চেয়ে তিন-চারগুণ বড় হয়ে ওঠে সাপের দেহের কিছু কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। খাবার ভেঙে হজম করার জন্য এ সময় সাপের দেহে এনজাইম নিঃসরণের পরিমাণও বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

সম্প্রতি গেলা কুমির হজম করতে কুইন্সল্যান্ডের জলচর অজগরের আরো কয়েকদিন সময় লাগবে। পেট সে পর্যন্ত ফোলাই থাকবে বলে জানান অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই । তিনি বলেন, আগামী দু’সপ্তাহ পরে ফোলা কমতে শুরু করবে। তিন সপ্তাহ পর সাপের মল হয়ে বের হয়ে আসবে একটি ক্যালসিয়ামের পিণ্ড। কুমির দেহের চর্বি ও আমিষ এরই মধ্যে সাপটি হজম করে নেবে। তবে কুমির দেহে যে সব অতিরিক্ত খনিজ উপাদান ছিল তা সাপ হজম করবে না। এগুলো এ পিণ্ডের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।

এ জাতীয় সাপ মানুষও গিলতে পারবে কি-না- এমন প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন এ অধ্যাপক। তিনি বলেন, ছোট ছোট গরু বা হরিণ গেলার দৃশ্য বিরল হলেও অজগর সাপের এ রকম ছবি বাস্তবে দেখা গেছে। কিন্তু মানুষের কাঁধ বেশ চওড়া হওয়ায় মানুষ গেলা সাপের পক্ষে সম্ভব নয়।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন