আগ্রাসনের নয়া পরিকল্পনা: পশ্চিম তীর থেকে সরবে না ইসরাইল

আগ্রাসনের নয়া পরিকল্পনা: পশ্চিম তীর থেকে সরবে না ইসরাইল

আগ্রাসনের নয়া পরিকল্পনা: পশ্চিম তীর থেকে সরবে না ইসরাইল


ইহুদিবাদী ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যে তাদের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড আরো পাকাপোক্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী মুশে ইয়ালুন বলেছেন, ইসরাইলের সেনারা জর্দান নদীর পশ্চিম তীর থেকে সরে আসবে না। তিনি বলেছেন, ইসরাইলের উচিত হবে না জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের কর্তৃত্ব ফিলিস্তিনিদের ওপর ছেড়ে দেয়া। আর যদি ফিলিস্তিনিদের কর্তৃত্বে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে ওই এলাকায় গাজার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।

ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী এমন সময় এ বক্তব্য দিলেন যখন বর্ণবাদী ইসরাইলের গোয়েন্দামন্ত্রী ইউভাল স্টেইনিট্‌য জর্দান উপত্যকায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘জর্দান উপত্যকার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের হাতে থাকবে। উল্লেখ করা যায়, আমেরিকা জর্দান উপত্যকায় আন্তর্জাতিক বাহিনী অথবা ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলের যৌথ বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছিল। ইসরাইলের গোয়েন্দামন্ত্রী আরো বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মন্ত্রীসভা জর্দান উপত্যকাকে ইসরাইল ভূখণ্ডে শামিল করে একটি প্রস্তাব পাশ করবে। ইসরাইল ১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর দখল করেছিল এবং তখন থেকেই ইসরাইল সেখানে ইহুদি বসতি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, ইসরাইলের দৈনিক ইয়াদিউত অহারনুত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ইসরাইলি কর্মকর্তারা ‘প্রাওয়ার-বেগিন’ পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করেছে এবং এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। ‘প্রাওয়ার-বেগিন’ বর্ণবাদী পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৪৮ সালে দখলীকৃত দক্ষিণ ভূখণ্ডের নাকাব এলাকার বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে ওই এলাকা থেকে বের করে দেয়া হবে এবং ফিলিস্তিনিদের এসব গ্রামকে ধ্বংস করে ফেলা হবে। ইসরাইলের পরিকল্পনা মন্ত্রী ইয়াহুদ প্রাওয়ার এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোনাচেম বেগিনের পুত্র বনি বেগিন এ পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছেন বলে এর নাম দেয়া হয়েছে ‘প্রাওয়ার-বেগিন’ পরিকল্পনা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ‘প্রাওয়ার-বেগিন’পরিকল্পনা স্থগিত রাখার নির্দেশ দিলেও ইসরাইলের কর্মকর্তারা আবারো এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন।

উল্লেখ করা যায়, ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আগ্রাসী লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সব রকম সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চালায়। ১৯৯১ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্য আপোষ আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস দখলদার ইসরাইলের কর্মকাণ্ড থেকে প্রমাণিত হয়েছে পাশ্চাত্য বিশেষ করে আমেরিকার পূর্ণ সমর্থনের কারণে ইসরাইল আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং অবাধে মধ্যপ্রাচ্যে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।

দশকের পর দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের কর্মকাণ্ড থেকে প্রমাণিত হয়েছে, তারা আদৌ শান্তি চায় না বরং শান্তির বিষয়টিকে তারা মূলত এ অঞ্চলে নিজেদের সম্প্রসারণকামী লক্ষ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। মধ্যস্থতার নামে আমেরিকাও এমন সব প্রস্তাব তুলে ধরছে যার ফলে ফিলিস্তিনিদের অধিকার পদদদিলত হওয়া ছাড়াও এ অঞ্চলে ইসরাইলের আগ্রাসী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে এবং বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়ার মাত্রাও যাতে কম থাকে। কিন্তু আমেরিকার এ পদক্ষেপকেও বেশিরভাগ ইসরাইলি কর্মকর্তা যথেষ্ট মনে করছেন না এবং তারা ফিলিস্তিনিদেরকে নূন্যতম ছাড় দিতেও রাজি নয়।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন