জেনেভায় স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নে সমঝোতা আরেক ধাপ অগ্রগতি

জেনেভায় স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নে সমঝোতা আরেক ধাপ অগ্রগতি

জেনেভায় স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নে সমঝোতা আরেক ধাপ অগ্রগতি


জেনেভায় স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। গত সোমবার ও মঙ্গলবার জেনেভায় জার্মানি ও নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের সমন্বয়ে গঠিত ছয় জাতিগোষ্ঠী এবং ইরানের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের বৈঠকে এ সমঝোতা হয়।

গত ২৪ নভেম্বর জেনেভায় পরমাণু চুক্তি সইয়ের পর চুক্তি বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দু’পক্ষের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এ পর্যন্ত তিন দফা আলোচনা হয়েছে। জেনেভা বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ইরানের পরমাণু আলোচক দলের সদস্য হামিদ বাইদিনেজাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ইরানের স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রেস টিভি জানিয়েছে, আগামী জানুয়ারির শেষ নাগাদ ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হবে। তিনি বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে দু’পক্ষই ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

এর আগে পাশ্চাত্যের কূটনৈতিক সূত্র থেকে বলা হয়েছিল, ২০ জানুয়ারি থেকে পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হবে। এরই অংশ হিসেবে খুব শিগগিরি ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এ ব্যাপারে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ইরানের বার্তা সংস্থাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, উঁচু পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে অমীমাংসিত কিছু বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছা সম্ভব। তিনি বলেন, জেনেভা চুক্তিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে যে সমঝোতা হয়েছে তা চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছার সুযোগ এনে দেবে।

উল্লেখ করা যায়, জেনেভা চুক্তিতে ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকারকে মেনে নেয়া হয়েছে। তবে ছয় জাতিগোষ্ঠী যদি তাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলে তাহলেই কেবল জেনেভা চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব। চুক্তি অনুযায়ী পাশ্চাত্য আগামী ছয় মাসের মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে আর কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে না এবং ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও পর্যায়ক্রমে তুলে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ছাড়া, ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পাশাপাশি আমেরিকায় আটক ইরানের অর্থ-সম্পদও ফেরত দেয়ার কথা রয়েছে।

মোট কথা, জেনেভায় স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, পরমাণু বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি বা সমঝোতায় পৌঁছানো যাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ ইরান শান্তিপূর্ণ পরমাণু পরমাণু কর্মসূচি বজায় রাখতে পারে। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে ইরানের কর্মকর্তারা বহুবার বলেছেন, পরমাণু সমস্যা সমাধানে পাশ্চাত্যের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে এবং তাদের প্রতি ইরানের তেমন আস্থা নেই। এ কারণে চলমান আলোচনায় ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা চলছে। জেনেভা চুক্তি অনুযায়ী দু’পক্ষই আগামী ছয় মাসের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান পরমাণু আলোচনা ও ধাপে ধাপে এর অগ্রগতি থেকে বোঝা যায়, আস্থা অর্জনের জন্য ইরান ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সব পক্ষের সদিচ্ছার ওপরই আলোচনার ফলাফল নির্ভর করছে। কারণ যে কোনো অযৌক্তিক ততপরতা জেনেভা চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন