পবিত্র রমজান মাসে প্রত্যেক রাত্রির বিশেষ মুস্তাহাব নামাজ

রমযান  رمضان‎ রমদ্বান, হল ইসলামিক বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে নবম মাস, যে মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ ইসলামিক উপবাস রোজা পালন করে থাকে।  রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে যা নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।এ মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়

পবিত্র রমজান মাসে প্রত্যেক রাত্রির বিশেষ মুস্তাহাব নামাজ

এস, এ, এ

রমযান  رمضان‎ রমদ্বান, হল ইসলামিক বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে নবম মাস, যে মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ ইসলামিক উপবাস রোজা পালন করে থাকে।  রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে যা নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।এ মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মুসলিম নর-নারীর উপর রোজা পালন ওয়াজিব। রোজা বা সাওম হল সুবহে সাদিক থেকে রাত্রি পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পঞ্চইন্দ্রিয়ের দ্বারা গুনাহের কাজ এবং (স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে) যৌনসংগম থেকে বিরত থাকা। এ মাসে মুসলিমগণ অধিক ইবাদত করে থাকেন। কারণ অন্য মাসের তুলনায় এ মাসে ইবাদতের সওয়াব বহুগুণে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আল্লামা বাকের মাজলিসি (রহ.) রমজান মাসের ফযিলত সম্পর্কে “যাদুল মাআদ” নামক গ্রন্থে প্রত্যেক দিনের নাম উল্লেখ করেছেন। বি:দ্র: নিন্মে বর্ণিত প্রত্যেকটি নামাজ দুই রাকাত করে পড়তে হবে। নামাজগুলো নিন্মরূপ:

১ম রমজান:

১ম রমজানের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২য় রমজান:

২য় রমজানের রাতে ৪ রাকাত নাম পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২০ বার সুরা ক্বদর পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

৩য় রমজান:

৩য় রমজানের রাতে ১০ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

৪র্থ রমজান:

৪র্থ রমজানের রাতে ৮ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২০ বার সুরা ক্বদর পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পাঠ করতে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

৫ই রমজান:

৫ম রমজানের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

৬ই রমজান:

৬ই রমজানের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১ বার সুরা মুলক পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

৭ই রমজান:

৭ই রমজানের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১৩ বার সুরা ক্বদর পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

৮ই রমজান:

৮ই রমজানের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে ১০০০ বার “সুবহান আল্লাহ তায়ালা ” পাঠ করতে হবে।

৯ই রমজান:

৯ই রমজানের রাতে ৬ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: নামাজটি মাগরিব ও এশার নামাজের মধ্যবর্তি সময়ে পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৭ বার আয়াতুল কুরসি পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে ৫০ বার বলতে হবে: “اَللّهمّ صَلِّ عَلَى‏ مُحَمَّد وَ آلِ مُحَمَّد”।

১০ই রমজান:

১০ই রমজানের রাতে ২০ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৩০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১১ই রমজান:

১১ই রমজানের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২০ বার সুরা কাউসার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১২ই রমজান:

১২ই রমজানের রাতে ৮ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৩০ বার সুরা ক্বদর পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৩ই রমজান:

১৩ই রমজানের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৪ই রমজান:

১৪ই রমজানের রাতে ৬ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৩০ বার সুরা যিলযাল পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৫ই রমজান:

১৫ই রমজানের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম দুই রাকাতের প্রথম রাকাতে  সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৬ই রমজান:

১৬ই রমজানের রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১২ বার সুরা তাকাসুর পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৭ই রমজান:

১৭ই রমজানের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে যে কোন সুরা একবার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। নামাজান্তে ১০০ বার বলতে হবে: “لاَ إلهَ اِلاَّ اللَّهُ”।

১৮ই রমজান:

১৮ই রমজানের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২৫ বার সুরা কাউসার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৯শে রমজান:

১৯শে রমজানের রাতে ৫০ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১ বার সুরা যিলযাল পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২০- ২৪শে রমজান:

২০-২৪শে রমজানের রাতে ৮ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে যে কোন সুরা একবার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২৫শে রমজান:

২৫শে রমজানের রাতে ৮ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২৬শে রমজান:

২৬শে রমজানের রাতে ৮ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২৭শে রমজান:

২৭শে রমজানের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১ বার সুরা মুলক পাঠ করতে হবে। অথবা সম্ভবপর না হলে সুরা মুলকের পরিবর্তে ২৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২৮শে রমজান:

২৮শে রমজানের রাতে ৬ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস এবং সুরা কাউসার প্রত্যেকটি ১০০ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে ১০০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে।

উক্ত নামাজটি পড়া সম্ভবপর না হলে শাইখ আব্বাস কুম্মী (রহ.)এর  বর্ণনা অনুযায়ী আরেকটি পন্থায়ও উক্ত নামাজটি পাঠ করা যেতে পারে। পন্থাটি নিন্মরূপ:

৬ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে আয়াতুল কুরসী, সুরা ইখলাস এবং সুরা কাউসার প্রত্যেকটি ১০ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে ১০০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে।

২৯শে রমজান:

২৯শে রমজানের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

৩০শে রমজান:

৩০শে রমজানের রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরুপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে ১০০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে।

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন