ইরানে নাগরিক স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা নেই: আসমা জাহাঙ্গির

ইরানে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের নতুন প্রতিবেদক আসমা জাহাঙ্গির তার প্রথম প্রতিবেদনে ইরান বিরোধী বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তার প্রতিবেদনে মাদক বিরোধী আইন সংশোধন এবং ফাঁসির পরিবর্তে অন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছেন।

ইরানে নাগরিক স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা নেই: আসমা জাহাঙ্গির

ইরানে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের নতুন প্রতিবেদক আসমা জাহাঙ্গির তার প্রথম প্রতিবেদনে ইরান বিরোধী বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তার প্রতিবেদনে মাদক বিরোধী আইন সংশোধন এবং ফাঁসির পরিবর্তে অন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি ইরানে অপরাধীদের চাবুক মারা কিংবা কেসাস বা ক্ষতির বদলে ক্ষতির মতো আইনকে নির্যাতন ও বর্বর হিসেবে অভিহিত করে এ ধরণের আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তিনি প্রতিবেদনের অন্য অংশে ইরানের বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এবং নাগরিক স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা নেই বলে অভিযোগ করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের ব্যাপারে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন সম্পূর্ণ বেআইনি এবং মানবাধিকার ইস্যুতে তারা পরস্পর বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। বর্তমানে মানবাধিকার বিষয়ে দুটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথমত, এ ধরণের প্রতিবেদনে একটি মুসলিম সমাজের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মানদণ্ডকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, পাশ্চাত্য মানবাধিকার বিষয়টিকে তাদের অবৈধ রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

এই দু'টি চ্যালেঞ্জ সাবেক প্রতিবেদক আহমাদ শাহিদের সময়ও লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তিনিও তখন পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমগুলোর দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইরান বিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশ করতেন। তিনি এমনসব অভিযোগ করতেন যার কোনো যুক্তি ছিল না। ২০১১ সালে আহমাদ শাহিদকে জাতিসংঘে ইরানের মানবাধিকার বিষয়ক রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তিনিও তার প্রতিটি প্রতিবেদনে ইরানে মানবাধিকার পরিস্থিতির ব্যাপারে অযৌক্তিক বক্তব্য ও অভিযোগ তুলে ধরতেন।

অন্যদিকে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ শক্তিগুলোও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ওপর তাদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে মানবাধিকার ইস্যুর অপব্যবহার করছে। আমেরিকা ও ইউরোপের সহযোগিতায় দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনিদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখে তাদের ওপর চালাচ্ছে সীমাহীন জুলুম নির্যাতন। এ ছাড়া, সন্ত্রাসীদেরকে লেলিয়ে দিয়ে ইরাক ও সিরিয়ায় হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এসব সন্ত্রাসীদের পেছনে আমেরিকা, ইসরাইল, ইউরোপ ও এ অঞ্চলের রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলোর সমর্থন রয়েছে।

আমেরিকা নিজেও বিভিন্ন দেশে সাধারণ মানুষ হত্যায় জড়িত রয়েছে। সৌদি আরব, আমেরিকা ও ব্রিটেন গত প্রায় দুই বছর ধরে ইয়েমেনে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। আবার কানাডা, আমেরিকা, ব্রিটেনসহ আরো অনেক দেশে কৃষ্ণাঙ্গ ও আদিবাসীদের অধিকার প্রকাশ্যেই লঙ্ঘন করা হচ্ছে এবং তাদের সঙ্গে বর্ণবাদী আচরণ করা হচ্ছে। অথচ এ দেশগুলোই আবার ইসলামী ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতির ব্যাপারে প্রশ্ন তুলছে যার কোনো ভিত্তি নেই। এ অবস্থায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের উচিত ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে বা কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে বরং বিশ্বে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য গঠনমূলক পদক্ষেপ নেয়া।

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন