সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৯

সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৯

সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৯

Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, hussain, mohammad, imam mahdi ,সূরা মরিয়ম, হজরত মরিয়ম, হজরত ঈসা, সূরা মারিয়াম, কুরআন, সূরা, মক্কা, হযরত যাকারিয়া, হযরত মারিয়াম, হযরত ইসা, হযরত ইয়াহিয়া, হযরত ইব্রাহিম, হযরত ইসমায়িল, ইদ্রিস, মারিয়াম, এশা, রিযিক, আধ্যাতিকতা, ইমাম মাহদী, চোখের জ্যোতি, মুমিন, ইমাম সাদিক, ইমাম আলী, খোদা, তেলাওয়াত, আল্লাহ, নবী, রাসূল, হযরত মুসা, মুজিযা, রিসালাত, মু’মিন, কিয়ামত, মানুষ, জাহান্নাম, গোনাহ, গোনাহগার, আয়াত, নবুওয়াত, নামাজ, ইবাদত, ওহী, মাদায়েন, মিশর, হিজরত, সূরা ত্বোয়াহা, সূরা আম্বিয়া, আম্বিয়া, সূরা, ফেরেশতা, হযরত লুত, নূহ, হযরত দাউদ, সোলায়মান, ইয়াহইয়া, হযরত ইউনুস, যাকারিয়া, নবী, রাসূল, নেয়ামত, আল্লাহ, ফাতিহা, মক্কা, সূরা আল ফাতিহা,
বিদায় হজে বিশ্বনবী (সা.)'র এর দেয়া ভাষণ:
বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। তাঁর প্রশংসা করি এবং তাঁর সাহায্য চাই, তাঁরই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাঁরই কাছে তওবা করি। আমাদের নাফসের (বা কুপ্রবৃত্তির) অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাই এবং আমাদের কৃতকর্মের প্রতিফল (থেকে তাঁর আশ্রয় চাই)। আল্লাহ্ যাকে পথ দেখান তাকে পথভ্রষ্ট করার কেউ নেই আর যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে পথ দেখানোর কেউ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক-অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও প্রেরিত পুরুষ।
হে আল্লাহর বান্দাগণ! আমি তোমাদেরকে অসিয়ত করছি আল্লাহকে ভয় করার তথা তাকওয়ার প্রতি। তোমাদেরকে তাঁর নির্দেশ মেনে চলার জন্য উৎসাহিত করছি। আর যা কিছু কল্যাণকর প্রথমেই আল্লাহর কাছে তা প্রার্থনা করছি। পরসমাচার, হে লোকেরা! আমি তোমাদের জন্য যা বর্ণনা করছি তা মনোযোগ দিয়ে শোনো। সত্যি কথা হলো আমি জানি না, হয়তো বা আগামী বছর এ স্থানে তোমাদের সাথে আমার আর সাক্ষাত হবে না।
বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে আরো বলেছেন: হে লোকেরা! তোমাদের রক্ত আর সম্ভ্রম তোমাদের ওপর হারাম যতক্ষণ না তোমাদের প্রতিপালকের সাথে মিলিত হও। (অর্থাত মুসলমানের রক্তপাত ও সম্মান হানি করা নিষিদ্ধ) যেমনভাবে আজকের এ দিনে এ ভূখণ্ডে তথা পবিত্র মক্কায় তোমাদের ওপর তা হারাম। ওহে, আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ্! তুমি সাক্ষী থেকো।
যার কাছে কোনো কিছু আমানত রাখা হয় সে যেন ঐ আমানতকে আমানতদাতার কাছে ফিরিয়ে দেয়। নিশ্চয় জাহেলি যুগ থেকে কোনো টাকার সুদ কারো ওপর আরোপ হয়ে থাকলে (এখন) তা অকার্যকর হয়ে যাবে। আর সর্বপ্রথম যে সুদ বাতিল ( বা সুদ অকার্যকর করার কাজ) শুরু করছি সেটা হলো আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের টাকার সুদ। জাহেলিয়াতের যুগ থেকে যদি কারো ওপর কোনো রক্তের দায় থেকে থাকে, তা হলে (এখন) তা বহাল থাকবে না। আর সর্বপ্রথম যার রক্তের দায় মাফ করলাম সে হলো আমের ইবনে রাবিয়্যাহ্, হারিস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের পুত্র।
বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে আরো বলেছেন: নিশ্চয়ই জাহেলি যুগের সব প্রথা ও আইন অকার্যকর, কেবল কাবাঘরের তত্ত্বাবধান আর হাজীদের আপ্যায়ন ছাড়া। ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের জন্য রয়েছে কিসাস বা বদলা।
হে লোকেরা! শয়তান তোমাদের এ ভূমিতে পূজিত হওয়া থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু সন্তুষ্ট হয়েছে যে, উপাসনা ব্যতীত অন্যান্য ছোট কাজে তার নির্দেশের আনুগত্য করা হবে। হে লোকেরা! ( যেসব মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ সেইসব মাসকে) তথা পবিত্র বা হারাম মাসগুলোকে অগ্র-পশ্চাত করা ( তথা অন্যান্য মাসের সাথে পরিবর্তন করা) কুফরেরই বিস্তার মাত্র। যারা কাফের তারা এর মাধ্যমে মানুষকে পথভ্রষ্ট বা গোমরাহ্ করে। এক বছরে সেটাকে হালাল করে, আরেক বছরে সেটাকে করে হারাম। যাতে আল্লাহ্ যে মাসগুলোকে হারাম করেছেন সেগুলোর সমান হয়ে যায়।
নিশ্চয়ই সময় ঘুরে সেদিনের অবস্থায় পৌঁছেছে যেদিন আল্লাহ্ আকাশগুলো এবং জমিনকে সৃষ্টি করেন। ‘নিশ্চয় মাসগুলোর সংখ্যা আল্লাহর কাছে বারোটি, আল্লাহর কিতাবে, যেদিন আসমানগুলো ও জমিনকে সৃষ্টি করেন, তন্মধ্যে চারটি মাস হারাম। তিনটি একাদিক্রমে। আর সেগুলো হল- জিলক্বদ, জিলহজ্ব এবং মুহররম। আর একাকী হল রজব -যা জমাদি ও শাবানের মাঝে। আমি কি প্রচার করিনি? হে আল্লাহ্! তুমি সাক্ষী থাকো।

বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে আরো বলেছেন: হে লোকেরা! নিশ্চয়ই তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের ওপর অধিকার রাখে। আর তাদের ওপরও তোমাদের অধিকার রয়েছে। তাদের ওপর তোমাদের অধিকার হলো তোমাদের বিছানায় (অর্থাৎ বিবাহ বন্ধনে থাকা অবস্থায় তারা) অন্য কারো সাথে সহবাস করবে না। আর যাকে তোমরা অপছন্দ করো তাকে তোমাদের অনুমতি ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতে দেবে না। আর ব্যভিচার করবে না। আর যদি তা করে তা হলে আল্লাহ্ অনুমতি দিয়েছেন যে, তোমরা তাদের ওপর কঠোর হবে, তাদের বিছানাকে বর্জন করবে এবং তাদেরকে প্রহার করবে। তবে এমনরূপে নয় যে যখমি হবে কিংবা কালচে দাগ পড়ে যাবে। অতঃপর যখন তোমাদের কাছে ফিরে আসে এবং তোমাদের আনুগত্য করে তখন তোমাদের ওপর কর্তব্য হলো তাদেরকে ন্যায়সঙ্গতভাবে খোরাক ও পোশাক দেবে। তোমরা তাদেরকে আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ আর আল্লাহর কিতাবের নির্দেশ মতো তাদেরকে নিজের জন্য হালাল করেছ। স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো এবং তাদের সাথে সদাচরণ করো।
বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে আরো বলেছেন:হে লোকেরা! মুমিনরা পরস্পর ভাই। মুমিন ভাইয়ের সম্পদ তার জন্য বৈধ নয় যদি না সে সম্মত থাকে। আমি কি (আল্লাহর নির্দেশ) উম্মতের কাছে পৌঁছাইনি? হে আল্লাহ্! তুমি সাক্ষী। তোমরা কুফরে প্রত্যাবর্তনের পথ ধরো না যে, একে অপরকে হত্যা করবে। কারণ, আমি তোমাদের মধ্যে এমন জিনিস রেখে গেলাম যা তোমরা যদি ধারণ করো, তা হলে কখনোই পথভ্রষ্ট হবে না : আল্লাহর কিতাব এবং আমার মনোনীত বংশধর -আহলে বাইত। আমি কি পৌঁছাই নি? হে আল্লাহ্! তুমি সাক্ষী।
হে লোকেরা! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক এক এবং তোমাদের পিতা এক। তোমরা সবাই আদম থেকে আর আদম হলো মাটি থেকে। তোমাদের মধ্যে সে-ই আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানিত যে বেশি খোদাভীরু। আর আরবের ওপর অনারবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই তাকওয়া ব্যতীত। কি, আমি কি পৌঁছাই নি? সবাই বলল : অবশ্যই। তিনি বললেন : সুতরাং উপস্থিতরা যেন অনুপস্থিতদেরকে সংবাদ দেয়।
বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে আরো বলেছেন: হে লোকেরা! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রত্যেক উত্তরাধিকারীকে উত্তরাধিকারের অংশ দান করেছেন। আর পরিত্যক্ত সম্পদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি অসিয়ত করলে তা কার্যকর নয়। সন্তান হবে স্বামীর আর ব্যভিচারীর কপালে জুটবে পাথর। যে কেউ নিজ পিতা ছাড়া অন্যের প্রতি নিজের পিতৃত্ব আরোপ করে এবং যে নিজ মনিব ভিন্ন অন্যকে মনিব বলে পরিচয় দেয় তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ, অভিশাপ বর্ষিত হোক ফেরেশতাকুল এবং সব মানুষের। আর আল্লাহ্ তার কাছ থেকে কোনো তওবা এবং বদলা গ্রহণ করেন না। আল্লাহর দরুদ ও করুণা বর্ষিত হোক তোমাদের ওপর।
সূত্রঃ তেহরান রেডিও

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন