সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৮

সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৮

সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৮

Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, hussain, mohammad, imam mahdi ,সূরা মরিয়ম, হজরত মরিয়ম, হজরত ঈসা, সূরা মারিয়াম, কুরআন, সূরা, মক্কা, হযরত যাকারিয়া, হযরত মারিয়াম, হযরত ইসা, হযরত ইয়াহিয়া, হযরত ইব্রাহিম, হযরত ইসমায়িল, ইদ্রিস, মারিয়াম, এশা, রিযিক, আধ্যাতিকতা, ইমাম মাহদী, চোখের জ্যোতি, মুমিন, ইমাম সাদিক, ইমাম আলী, খোদা, তেলাওয়াত, আল্লাহ, নবী, রাসূল, হযরত মুসা, মুজিযা, রিসালাত, মু’মিন, কিয়ামত, মানুষ, জাহান্নাম, গোনাহ, গোনাহগার, আয়াত, নবুওয়াত, নামাজ, ইবাদত, ওহী, মাদায়েন, মিশর, হিজরত, সূরা ত্বোয়াহা, সূরা আম্বিয়া, আম্বিয়া, সূরা, ফেরেশতা, হযরত লুত, নূহ, হযরত দাউদ, সোলায়মান, ইয়াহইয়া, হযরত ইউনুস, যাকারিয়া, নবী, রাসূল, নেয়ামত, আল্লাহ, ফাতিহা, মক্কা, সূরা আল ফাতিহা,
জ্ঞান বা আকল ও বুদ্ধিমত্তা এবং মূর্খতা সম্পর্কে রাসূল (সা.)'র একটি আলোচনা:
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন : জ্ঞান অর্জন করো। কারণ, তা শেখা ভালো। আর তা নিয়ে পরস্পর আলোচনা করা আল্লাহর তাসবিহ পাঠের সমতুল্য। আর জ্ঞান অনুসন্ধান করা হচ্ছে জিহাদের সমতুল্য। যে সে সম্পর্কে অবহিত নয় তাকে তা জানানো সদকাস্বরূপ। উপযুক্ত পাত্রে সেটা দান করা আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। কারণ, তা হারাম ও হালাল অবগত হওয়ার মাধ্যম হয়। আর যে ব্যক্তি জ্ঞান অনুসন্ধানে থাকে তা তাকে বেহেশতের দিকে পরিচালিত করে; তাকে একাকীত্বের ভয় থেকে রক্ষা করে ও নিঃসঙ্গতায় সঙ্গী হয়। আর জ্ঞান-অনুসন্ধান অজানা বা গোপন বিষয়ের নির্দেশক, শত্রুর বিরুদ্ধে হাতিয়ার এবং বন্ধুদের জন্য অলঙ্কার। আল্লাহ এর মাধ্যমে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উত্থান ঘটান ও তাদেরকে সত কাজের নেতা বানিয়ে দেন যাতে অন্যরা তাদের অনুসরণ করে এবং তাদের কাজ-কর্মের প্রতি অন্যরা মনোযোগী হয় ও তাদের নিদর্শনগুলো অন্যদের জন্য শিক্ষণীয় হয়। ফেরেশতারা তাদের সাথে বন্ধুত্বের জন্য প্রেমাকুল হয়ে পড়ে। কারণ, জ্ঞান হলো অন্তরগুলোর প্রাণ, দৃষ্টিগুলোর অন্ধত্ব দূরকারী আলো, শরীরগুলোর দুর্বলতা দূরকারী শক্তির মাধ্যম, আল্লাহ্ জ্ঞানের অধিকারীদেরকে বন্ধুর স্থানে আসীন করেন। আর দুনিয়া ও আখিরাতে তাদেরকে পুণ্যবানদের সাহচর্য দান করেন।
জ্ঞান সম্পর্কে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আরো বলেছেন,জ্ঞানের মাধ্যমেই আল্লাহর আনুগত্য হয় এবং তিনি উপাসিত হন। জ্ঞানের মাধ্যমেই আল্লাহ্ পরিচিত হন এবং একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা পায়। জ্ঞানই আত্মীয়তার বন্ধন জোড়া লাগায়, হালাল ও হারামকে চিনিয়ে দেয়। আর জ্ঞান হলো বুদ্ধিমত্তা বা আকলের ইমাম বা নেতা।
আল্লাহ্ সৌভাগ্যবানদেরকেই আকল তথা বুদ্ধি দান করেন। আর দুর্ভাগাদের তা থেকে বঞ্চিত করেন। বুদ্ধিমানদের বৈশিষ্ট্য হলো যে ব্যক্তি তার সঙ্গে মূর্খতা করে, তিনি তার প্রতি ধৈর্যশীল হন। আর যে ব্যক্তি তার ওপর জুলুম করে, তিনি তাকে ক্ষমা করেন। বুদ্ধিমান তার অধীনদের প্রতি বিনয়ী হন। আর পুণ্য অর্জনের জন্য ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেন। যখন তিনি কথা বলতে চান, আগে ভেবে নেন। যদি পরিকল্পিত কথাটি ভালো মনে হয় তাহলেই বলেন এবং লাভবান হন। আর যদি পরিকল্পিত কথাটিকে মন্দ বলে মনে হয় তাহলে নীরব থাকেন এবং লাভবান হন। আর কোনো বিপদ নেমে আসলে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং নিজ হাত ও জিহ্বাকে সংবরণ করেন। আর যদি কোনো গুণ-মর্যাদা দেখতে পান সেটাকে লুফে নেন। লজ্জা তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না। তার থেকে কোনো লালসা প্রকাশ পায় না। এ হলো দশটি বৈশিষ্ট্য যা দিয়ে বুদ্ধিমানকে চেনা যায়।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন,আর মূর্খের বৈশিষ্ট্য হলো: সে যার সাথেই চলাফেরা করে, তার ওপর অবিচার করে। তার অধীনদের ওপর জুলুম করে। তার ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে বেয়াদবি করে। তার কথা-বার্তা হয় চিন্তা ছাড়াই। যখন কথা বলে পাপ করে। আর যখন নিশ্চুপ থাকে, তখন উদাস হয়। যদি কোনো ফিতনার মুখোমুখি হয়, তা হলে সেদিকে ছুটে যায়। ফলে ফিতনা তাকে ধ্বংস করে দেয়। আর যদি কোনো গুণ-মর্যাদা প্রত্যক্ষ করে, মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং ধীর গতি-সম্পন্ন হয়ে যায়। তার পুরাতন পাপগুলোকে ভয় পায় না। আর তার অবশিষ্ট ভালো কাজে আলস্য করে এবং শ্লথ হয়। আর যা কিছু সে নষ্ট করেছে অথবা তার হাতছাড়া হয়ে গেছে সেদিকে সে ভ্রুক্ষেপ করে না। এ হলো মূর্খের বা আকল থেকে বঞ্চিত ব্যক্তির দশটি বৈশিষ্ট্য।
এবারে বিশ্বনবী (সা.)'র একটি উপদেশ তুলে ধরছি:
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আরো বলেছেন, আমার কি হলো যে দেখছি দুনিয়া-প্রীতি অনেকের ওপর ভর করেছে? যেন মনে হয়, এ দুনিয়ায় মৃত্যু তাদের জন্য নয়, বরং অন্য কারো জন্য লেখা হয়েছে। যেন এ দুনিয়ার জবাবদিহি আল্লাহর কাছে অন্য কেউ করবে! আর তাদের মৃতদের সংবাদকে এমন মুসাফির দলের সংবাদ বলে মনে করছে যারা শিগগিরই তাদের কাছে ফিরে আসবে! তাদের কবরে দাফন করে আর তাদের পরিত্যক্ত মাল-সম্পদকে ভক্ষণ করে। যেন তাদের জায়গায় সে নিজে চিরস্থায়ী থাকবে? হায় আফসোস, হায়! অনুজরা কি অগ্রজদের থেকে উপদেশ গ্রহণ করবে না? তারা আল্লাহর কিতাবে যে উপদেশই রয়েছে সেগুলোকে উপেক্ষা করে এবং ভুলে যায়। আর তারা প্রত্যেক মন্দ কাজের খারাপ পরিণতি থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করে। আর কোনো ক্ষয়-ক্ষতি নেমে আসার এবং কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটারও ভয় করে না।
ধন্য সেই ব্যক্তি যার খোদা-ভীতি তাকে মানুষের ভয় থেকে বিরত রাখে, যার রোজগার পবিত্র, অন্তর পরিশুদ্ধ, বাহ্যিক দিকও সুন্দর এবং চরিত্র সঠিক।
ধন্য সেই ব্যক্তি যে তার সম্পদের অতিরিক্ত অংশ দান করে। আর বেশি কথা বলে না।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আরো বলেছেন, ধন্য সেই ব্যক্তি যে পবিত্র মহীয়ান আল্লাহর জন্য বিনত হয়। আর তার জন্য যা হালাল করা হয়েছে সেগুলোকেও ত্যাগ করে, অবশ্য আমার সুন্নাতকে বর্জন করার ইচ্ছা ছাড়া। আর দুনিয়ার ভালো ও আকর্ষণীয় জিনিসগুলোকেও পরিহার করে। অবশ্য আমার সুন্নাতকে ছেড়ে অন্য কোনো পন্থা গ্রহণ ছাড়া। আর আমার পরে আমার মনোনীত বংশধরদের সাথে থাকে এবং দীনের সমঝদার ও প্রজ্ঞাবানদের সাথে ওঠা-বসা করে। আর অভাবীদের দয়া করে। ধন্য সেই মুমিন ব্যক্তি যে আল্লাহর অবাধ্যতার পথ ছাড়া অন্য পথে তা ব্যয় করে। আর গরীব অসহায় লোকদের মাঝে তা বণ্টন করে দেয়। আর যারা গর্বিত ও অহংকারী হয়, দুনিয়ার প্রতি আসক্ত থাকে, বিদআত চালু করে এবং আমার সুন্নাতের বিরুদ্ধে চলে আর আমার পন্থার বিরুদ্ধে কাজ করে তাদের থেকে দূরে থাকে। ধন্য সেই ব্যক্তি যে মানুষের সাথে সৎ আচরণ করে এবং তাদের উপকার করে, আর নিজ অনিষ্টতাকে তাদের থেকে ফিরিয়ে রাখে।
সূত্রঃ তেহরান রেডিও

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন