সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৭

সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৭

সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -৭

Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, hussain, mohammad, imam mahdi ,সূরা মরিয়ম, হজরত মরিয়ম, হজরত ঈসা, সূরা মারিয়াম, কুরআন, সূরা, মক্কা, হযরত যাকারিয়া, হযরত মারিয়াম, হযরত ইসা, হযরত ইয়াহিয়া, হযরত ইব্রাহিম, হযরত ইসমায়িল, ইদ্রিস, মারিয়াম, এশা, রিযিক, আধ্যাতিকতা, ইমাম মাহদী, চোখের জ্যোতি, মুমিন, ইমাম সাদিক, ইমাম আলী, খোদা, তেলাওয়াত, আল্লাহ, নবী, রাসূল, হযরত মুসা, মুজিযা, রিসালাত, মু’মিন, কিয়ামত, মানুষ, জাহান্নাম, গোনাহ, গোনাহগার, আয়াত, নবুওয়াত, নামাজ, ইবাদত, ওহী, মাদায়েন, মিশর, হিজরত, সূরা ত্বোয়াহা, সূরা আম্বিয়া, আম্বিয়া, সূরা, ফেরেশতা, হযরত লুত, নূহ, হযরত দাউদ, সোলায়মান, ইয়াহইয়া, হযরত ইউনুস, যাকারিয়া, নবী, রাসূল, নেয়ামত, আল্লাহ, ফাতিহা, মক্কা, সূরা আল ফাতিহা,
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল ও শিক্ষক বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর প্রখ্যাত সাহাবি মুআয ইবনে জাবাল (রা.)-কে ইয়েমেনে পাঠানোর সময় তাঁকে কিছু অসিয়ত করেছিলেন। এখানে সেই অমর অসিয়তের প্রধান কিছু অংশ তুলে ধরছি।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: হে মুআয! তাদেরকে তথা ইয়েমেনের নও-মুসলিমদেরকে আল্লাহর কুরআন শিক্ষা দাও। তাদেরকে ভালো চরিত্রের মানুষ হিসেবে গড়ে তোল। মানুষকে তাদের নিজ নিজ স্থানে স্থাপন করো- সৎ হোক আর মন্দ হোক। আর আল্লাহর নির্দেশকে তাদের মধ্যে বাস্তবায়ন করো। আল্লাহর নির্দেশ ও তাঁর মালের ব্যাপারে কারো ভয় করবে না। কারণ, তা তোমার কর্তৃত্বাধীন বা ইখতিয়ারাধীন নয় এবং তোমার মালও নয়। আর তাদের আমানতকে কম হোক আর বেশি হোক তাদের কাছে ফিরিয়ে দেবে। আর অধিকার তরক করার ক্ষেত্র ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে তুমি তাদের সাথে নমনীয় ও ক্ষমাশীল হবে। মূর্খ বলবে, আল্লাহর অধিকার বর্জন করেছ। আর তোমার কর্মচারীদের পক্ষ থেকে যে বিষয়েই তোমার প্রতি অভিযোগের ভয় করবে, ক্ষমা চেয়ে নেবে যাতে তারা তোমাকে ক্ষমা করে। জাহেলি যুগের রীতি-নীতিগুলোর মূলোৎপাটন করবে, তবে সেগুলো ছাড়া যেগুলোকে ইসলাম সমর্থন করেছে।
বিশ্বনবী (সা.) মুআয ইবনে জাবাল (রা.)-কে আরো বলেছেন, ইসলামের বিষয়গুলো তা ছোট-বড় যা-ই হোক সবগুলোকেই প্রকাশ করো। আর তোমার সর্বাধিক প্রচেষ্টা যেন নামাযের মধ্যে নিয়োজিত হয়। কেননা, নামায হলো ধর্মের প্রতি স্বীকারোক্তির পরে ইসলামের মূল বিষয়। মানুষকে আল্লাহ্ এবং পরকালের কথা স্মরণ করাও। উপদেশকে চালু রাখবে। কারণ, এটা আল্লাহর প্রিয় বিষয়গুলোর পথে চলতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। এরপর তাদের মধ্যে শিক্ষকদেরকে ছড়িয়ে দাও। আর ঐ আল্লাহর ইবাদত করো যার কাছে ফিরতে হবে। আর আল্লাহর রাস্তায় কারো ভর্তসনার তোয়াক্কা করবে না।
বিশ্বনবী (সা.) মুআয ইবনে জাবাল (রা.)-কে আরো বলেছেন, আমি তোমাকে অসিয়ত করছি আল্লাহকে ভয় করে চলবে, সত্য কথা বলবে, অঙ্গীকার রক্ষা করবে, আমানত ফিরিয়ে দেবে, খেয়ানত থেকে দূরে থাকবে, কোমল ভাষায় কথা বলবে, আগে সালাম দেবে, প্রতিবেশীকে সাহায্য করবে, অনাথের প্রতি সদয় হবে, ভালো কাজ করবে, প্রত্যাশাকে ছোট করবে, পরকালকে ভালোবাসবে, হিসাব-নিকাশকে ভয় করবে, ঈমানের প্রতি লেগে থাকবে, কোরআনকে বুঝে পড়বে, রাগ সংবরণ করবে এবং বিনয়ী হবে।
আমি তোমাকে সতর্ক করছি যে, কোন মুসলমান ভাইয়ের বদনাম করো না কিংবা পাপীকে অনুসরণ করো না কিংবা ন্যায়বান নেতাকে অমান্য করো না কিংবা সত্যবাদীকে অবিশ্বাস করো না, কিংবা মিথ্যাবাদীকে বিশ্বাস করো না। তোমার প্রতিপালককে পদে পদে স্মরণ করবে। আর প্রত্যেক পাপের জন্য নতুন করে তওবা করবে-গোপন পাপকে গোপন তওবার মাধ্যমে, আর প্রকাশ্য পাপকে প্রকাশ্য তওবার মাধ্যমে।
বিশ্বনবী (সা.) মুআয ইবনে জাবাল (রা.)-কে আরো বলেছেন, হে মুআয! যদি না জানতাম যে, কিয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকব না, তা হলে আমার উপদেশকে ছোট করতাম। কিন্তু আমি জানি যে, আমরা কখনোই কিয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকব না। তাই জেনে রাখ, হে মুআয! তোমাদের মধ্যে আমার কাছে সেই বেশি প্রিয় যে আমার সাথে তদ্রূপ সাক্ষাৎ করবে যেরূপ (ভালো অবস্থায়?) আমার থেকে আলাদা হয়েছে।
এবারে বিশ্বনবী (সা.)'র অন্য একটি উপদেশমূলক ভাষণ বা বক্তব্য তুলে ধরছি:
প্রত্যেক জিনিসেরই মর্যাদা থাকে। আর সভার মর্যাদা হলো কিবলামুখী হওয়া। যে ব্যক্তি সবার চেয়ে প্রিয় হতে চায়, তার উচিত আল্লাহকে ভয় করা। যে ব্যক্তি চায় সবচেয়ে শক্তিশালী হতে, তার উচিত আল্লাহর ওপর ভরসা করা। আর যে ব্যক্তি চায় সবচেয়ে ক্ষমতাবান হতে, তার উচিত নিজের কাছে যা আছে তার চেয়ে আল্লাহর কাছে যা আছে তার ওপর বেশি নির্ভর করা। এরপর মহানবী (সা.) বলেন : তোমাদেরকে কি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোকের কথা বলব? সবাই বলল : অবশ্যই হে রাসূলুল্লাহ্! তিনি বললেন
যে ব্যক্তি একা বসবাস করে, আর আগন্তুককে বাধা দেয় ও নিজ ক্রীতদাসকে চাবুক মারে, তোমাদেরকে কি তার চেয়েও নিকৃষ্ট লোকের কথা বলব? সবাই বলল : অবশ্যই হে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)! তিনি বললেন : যে বিচ্যুতিকে ক্ষমা করে না এবং অজুহাতকে মেনে নেয় না। আবারো বললেন : তার চেয়েও নিকৃষ্ট লোকের কথা কি বলব না? সবাই বলল : অবশ্যই হে রাসূলুল্লাহ্ ! তিনি বললেন : যার কাছ থেকে ভালোর আশা নেই, আর যার অনিষ্টতা থেকেও নিস্তার নেই। এরপর বিশ্বনবী (সা.) বললেন : তার চেয়েও নিকৃষ্ট লোকের কথা কি তোমাদেরকে বলব না? সবাই বলল : অবশ্যই হে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)! তিনি বললেন : যে মানুষের সাথে শত্রুতা করে আর মানুষও তার সাথে শত্রুতা করে।
বিশ্বনবী (সা.)'র উপদেশমূলক ওই ভাষণে আরো এসেছে, " ঈসা (আ.) বনি ইসরাইলের উদ্দেশ্যে বলেছেন : হে বনি ইসরাইল! মূর্খের কাছে প্রজ্ঞার কথা বলো না, তা হলে তার ওপর অবিচার করবে। আর যারা প্রজ্ঞার পাত্র সেখানে তার থেকে কুণ্ঠিত হয়ো না, তা হলে তাদের ওপর অবিচার করবে। আর অত্যাচারীর সমকক্ষ হয়ো না, তা হলে তোমার গুণ-মর্যাদা নষ্ট হয়ে যাবে। হে বনি ইসরাইল! কাজকর্ম তিন ধরনের হয় :
এক ধরনের কাজের সঠিক হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। তোমরা তার পেছনেই থাকো। আরেক ধরনের কাজের ভ্রষ্ট হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। তোমরা তা পরিহার করো। আরেক ধরনের কাজ বিতর্কিত। সেটাকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দাও।
হে লোকেরা ! নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রয়েছে (কিছু) শিক্ষা। কাজেই সেসব শিক্ষার দিকে ফিরে যাও। আর নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রয়েছে পরিণতি। তোমরা সে পরিণতিতে পৌঁছাও। নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি দু’টি ভয়ের মধ্যে থাকে। প্রথমত সে জীবন নিয়ে যে জীবন তার পার হয়ে গেছে, অথচ জানে না সেজন্য আল্লাহ্ কী করবেন। আর দ্বিতীয়ত যে আয়ু তার বাকি রয়েছে, অথচ জানে না সেজন্য আল্লাহ্ কী নির্ধারণ করে রেখেছেন। কাজেই আল্লাহর বান্দাকে নিজের থেকেই নিজের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে। দুনিয়াকে আখেরাতের জন্য, যৌবনকে বৃদ্ধ হওয়ার আগে এবং জীবনকে মৃত্যু আসার আগে কাজে লাগাতে হবে। সেই সত্তার (আল্লাহর) কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! মৃত্যুর পরে কোনো নালিশের জায়গা নেই। আর দুনিয়ার পরে কোনো বাড়ি নেই, বেহেশত এবং দোযখ ছাড়া। "
সূত্রঃ তেহরান রেডিও

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন