অসমে মুখ্যমন্ত্রী না আসা পর্যন্ত নিহতদের দাফনে অস্বীকৃতি

ভারতের অসমে উগ্র বোড়ো সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৩৩ জন মুসলমান নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বাকসা জেলায় আজ বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় জনতা। তারা সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে সফর করার অনুরোধ জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী না আসা পর্যন্ত নিহতদের দাফন করতে

অসমে মুখ্যমন্ত্রী না আসা পর্যন্ত নিহতদের দাফনে অস্বীকৃতি

ভারতের অসমে উগ্র বোড়ো সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৩৩ জন মুসলমান নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বাকসা জেলায় আজ বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় জনতা। তারা সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে সফর করার অনুরোধ জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী না আসা পর্যন্ত নিহতদের দাফন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তাদের পরিবার।

এদিকে, সারা অসমে আজ প্রতিবাদ বিক্ষোভ, রেল অবরোধ এবং বেশ কয়েকটি জেলায় হরতাল ও কালো দিবস পালিত হচ্ছে। এসব কর্মসূচিতে পোড়ানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী তরুন গগৈ ও বড়ো নেতা হাগ্রামা ও বিপিএফ নেত্রী প্রমীলারানি ব্রহ্মের কুশপুত্তলিকা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বাকসা, কোকরাঝাড়, চিরাং জেলা ও ধুবড়ি-বরপেটা-উদালগুড়ি জেলার কিছু অংশেজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। চলছে সেনাবাহিনীর টহল। বাকসায় সন্ত্রাসীদের দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

বোড়োভূমির হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজতে জাতীয় তদন্ত সংস্থাকে (এনআইএ) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে তরুণ গগৈ সরকারের দিকে। গগৈর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে। তবে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। কারণ দায়িত্ব ছেড়ে পালাতে তিনি রাজি নন।

বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক হামলায় আহত আরো একটি শিশু গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৩ জনে। এখনো ২২ জন মুসলমান নিখোঁজ রয়েছেন।

অসম সরকারের দাবি, বোড়োভূমিতে হত্যাকাণ্ডের পিছনে রয়েছে বোড়ো জঙ্গি সংগঠন এনডিএফবি (সংবিজিত)। কিন্তু এনডিএফবি গোষ্ঠীর প্রচার সম্পাদক এন ইসারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, বোড়োভূমির হত্যাকাণ্ডে তারা জড়িত নয়। তাদের অভিযোগ, শাসক জোটের প্ররোচনাতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

তবে, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিবালের অভিযোগ, নির্বাচনে ফায়দা তুলতে বিজেপি গোটা দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বুনেছে। তারই ফলশ্রুতি এই ধরনের সংঘর্ষ। তার অভিযোগ, “বিজেপি নেতারা অসমে উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন। এ জন্য জাল ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে।”

এদিকে, অসমে সহিংসতার জন্য নরেন্দ্র মোদীকে দায়ী করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। মোদীর উস্কানিমূলক মন্তব্য এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মোদী নিজে কিছু দিন আগে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কড়া মন্তব্য করেছিলেন। সে দিকেও আঙুল তুলছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ গতকাল দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রশ্ন তুলেছেন, অসমের সংসদ সদস্য হয়ে প্রধানমন্ত্রী কী করছেন?

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছে। অসমের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আহ্বানও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তা সত্ত্বেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ও অসম সরকার বোড়োভূমির হত্যাকাণ্ড নিয়ে অস্বস্তি এড়াতে পারছে না।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন