মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী: ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার রক্ষা করতে পারবে

ইরানের পরমাণু ইস্যুতে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান বলেছেন, চূড়ান্ত পরমাণু চুক্তিতে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার রক্ষা করতে পারবে। তিনি গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরাইলের মত আমেরিকাও চায় ইরানের ভেতরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা না

ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার রক্ষা করতে পারবে

ইরানের পরমাণু ইস্যুতে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান বলেছেন, চূড়ান্ত পরমাণু চুক্তিতে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার রক্ষা করতে পারবে। তিনি গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরাইলের মত আমেরিকাও চায় ইরানের ভেতরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা না হোক। তবে তিনি এও স্বীকার করেন, এ ধরণের দাবি অবাস্তব।

ভিয়েনায় পরমাণু আলোচনার একদিন পর ওয়েন্ডি শেরম্যান ইসরাইল সফরে যান এবং সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতে পরমাণু আলোচনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, অন্য কারো উচিত হবে না চলমান পরমাণু আলোচনার ব্যাপারে নাক গলানো।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য ইসরাইলি নেতৃবৃন্দ এবং ওয়াশিংটনে উগ্র গোষ্ঠীগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে যারা কিনা হুমকি ও চাপ সৃষ্টি করে ইরানের সঙ্গে চলমান আলোচনা প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে আসছে। শেরম্যানের ইসরাইল সফরের পর সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। সম্প্রতি ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠী ভিয়েনায় একটি সমঝোতায় পৌঁছে। ওই সমঝোতা অনুযায়ী ইরান পাঁচ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে। আর অন্যদিকে পাশ্চাত্যও পর্যায়ক্রমে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। এ সমঝোতার ফলে আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে পরমাণু বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনা ইতিবাচক গতিতে এগিয়ে চললেও মার্কিন কট্টরপন্থী গ্রুপ ও ইহুদিবাদী লবির ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। ওয়েন্ডি শেরম্যানের ইসরাইল সফরের উদ্দেশ্য ওই ষড়যন্ত্রের অংশ বলে অনেকে মনে করছেন। বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা যায়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে উপেক্ষা এবং দেশটির ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা একটি ভ্রান্ত নীতি। এ অবস্থায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচির অধিকারকে পুরোপুরি মেনে নেয়ার মাধ্যমেই কেবল এ সংক্রান্ত আলোচনা সফল হতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওয়েন্ডি শেরম্যান সম্প্রতি ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন এবং এ বিষয়টি আলোচনার টেবিলে উত্থাপনের যে প্রস্তাব দিয়েছেন তার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইহুদিবাদী লবিকে খুশি করা। ওয়েন্ডি শেরম্যানের সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, বর্তমানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে আমেরিকার নীতিতে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে এবং শেরম্যান নিজেও বলেছেন, পরমাণু বিষয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ওয়াশিংটন বদ্ধ পরিকর।

এদিকে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পরমাণু বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য যখন ব্যাপক চেষ্টা চলছে তখন মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্র দেশগুলো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের ঘন ঘন মধ্যপ্রাচ্য সফর এবং আগামী মাসে প্রেসিডেন্ট ওবামার সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনা থেকে এ বিষয়টি মূল্যায়ন করা যায়।
 

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন