যকৃতে চর্বি?

আপনার যকৃতে চর্বি জমেছে—চিকিৎসক প্রায়ই এ কথা অনেককে বলে থাকেন। কিন্তু কেন এবং এতে কী ক্ষতি হতে পারে, এর চিকিৎসাই বা কী—এ নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন। শরীরে চর্বি বিপাকপ্রক্রিয়ার অসামঞ্জস্য এবং ইনসুলিন অকার্যকারিতার জন্য যকৃতের কোষগুলোতে অস্বাভাবিক চর্বি, ব

যকৃতে চর্বি?
আপনার যকৃতে চর্বি জমেছে—চিকিৎসক প্রায়ই এ কথা অনেককে বলে থাকেন। কিন্তু কেন এবং এতে কী ক্ষতি হতে পারে, এর চিকিৎসাই বা কী—এ নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন।
শরীরে চর্বি বিপাকপ্রক্রিয়ার অসামঞ্জস্য এবং ইনসুলিন অকার্যকারিতার জন্য যকৃতের কোষগুলোতে অস্বাভাবিক চর্বি, বিশেষ করে ট্রাইগ্লিসারাইড জমে। এতে যকৃতের ওজন হিসেবে ৫ থেকে ১০ শতাংশ চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। মোটামুটি ১০ থেকে ২৪ শতাংশ ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত। জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব রয়েছে এ সমস্যার মূলে। অ্যালকোহল সেবনকারী এবং স্থূল ব্যক্তিদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৭৫ শতাংশ। নারী-পুরুষ উভয়ই এতে আক্রান্ত হতে পারেন। শিশু-কিশোরেরাও এ থেকে মুক্ত নয়।
যকৃতে চর্বি বা চর্বিজনিত রোগ মোটা দাগে দুই রকম—অ্যালকোহলজনিত এবং অন্যান্য কারণজনিত। উভয় ক্ষেত্রেই, সাধারণ চর্বি জমা থেকে শুরু করে রোগটি নানা জটিল ধাপে অগ্রসর হতে পারে, যেমন: যকৃতের প্রদাহ, যকৃতের প্রদাহজনিত ক্ষত বা সিরোসিস, যকৃতের অকার্যকারিতা ইত্যাদি। অ্যালকোহলজনিত কারণে এ থেকে যে সিরোসিস হয়, তাতে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি, প্রায় ১০ শতাংশ।
কারা ঝুঁকিতে আছেন?
১. যেসব পুরুষ দৈনিক ৩০ গ্রামের বেশি এবং নারী ২০ গ্রামের বেশি অ্যালকোহল সেবন করেন, অন্তত সপ্তাহে দুই দিন বা তার অধিক।
২. টাইপ ২ ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরল বা চর্বির আধিক্য, স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তি।
৩. পাকস্থলি ও পরিপাকতন্ত্রে অস্ত্রোপচারজনিত জটিলতা, অপুষ্টি, অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস।
৪. যকৃতের উইলসন্স ডিজিস, পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ, হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত ব্যক্তি।
৫. বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও চর্বি জমে; যেমন: স্টেরয়েড, এমিওডেরন, মিথোট্রেক্সেট, ডিলটিজেম, টেট্রাসাইক্লিন, কিছু অ্যান্টিভাইরাস ইত্যাদি।
৬. ক্ষতিকারক বিভিন্ন রাসায়নিক, যেমন ফসফরাস, কীটনাশক, বিষাক্ত মাশরুম ইত্যাদি
রোগনির্ণয়: সাধারণত গোড়ার দিকে এবং কোনো জটিলতা না থাকলে কোনো উপসর্গই থাকে না। অন্য কোনো কারণে পরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ে। পেটের একটি আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে যকৃতের চর্বি সহজেই শনাক্ত করা যায়। টিস্যু পরীক্ষার মাধ্যমে কখনো রোগের শ্রেণী ও ধাপ নির্ণয় করা হয়।
যকৃতে চর্বি জমার ঝুঁকি ও কারণগুলোকে প্রতিরোধের মাধ্যমেই কেবল এ রোগের প্রতিকার সম্ভব। কেননা রোগটির কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।
সূত্রঃ মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল।

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন