ম্যালেরিয়ার মশার জিনের গঠন বদলে যাচ্ছে

আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী দুই জাতের অ্যানোফিলিস মশার জেনেটিক গঠন বদলে যাচ্ছে এবং এ দুই মশা আলাদা প্রজাতিতে পরিণত হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন। খ্যাতনামা বিজ্ঞান সাময়িকী 'সায়েন্সে' তাদের এ গবেষণার কথা প্রকাশ হয়েছে। ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী ম

ম্যালেরিয়ার মশার জিনের গঠন বদলে যাচ্ছে
আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী দুই জাতের অ্যানোফিলিস মশার জেনেটিক গঠন বদলে যাচ্ছে এবং এ দুই মশা আলাদা প্রজাতিতে পরিণত হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন। খ্যাতনামা বিজ্ঞান সাময়িকী 'সায়েন্সে' তাদের এ গবেষণার কথা প্রকাশ হয়েছে। ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী মশা নিধনের মাধ্যমে বর্তমানে এই প্রাণঘাতী ব্যাধি নিয়ন্ত্রণের যে কার্যক্রম চলছে তা এর ফলে ব্যর্থ হয়ে যাবে বলে বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন। কারণ এ সব কার্যক্রম বিবর্তিত নতুন প্রজাতির অ্যানেফিলিস মশার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না কিংবা এসব মশাকে ধ্বংস করতে পারবে না। প্রতিবছর আফ্রিকা ও এশিয়ায় ম্যালেরিয়া জ্বরে ভুগে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। আফ্রিকার সাব-সাহারা এলাকায় 'অ্যানোফিলিস গাম্বিয়া' নামের এক জাতের মশা ম্যালেরিয়া ছড়ায়। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা এ মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গবেষণা করছেন। এ সব গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, এ মশার মধ্যে দু' জাতের মশার জিনের গঠন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। তবে , তাদের দৈহিক গঠন এখনো আগের মতই রয়েছে। অর্থাৎ জিনের গঠন বদলালেও রূপান্তর ঘটলেও সে কারণে দৈহিক গঠনে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
এ গবেষণা দলের সদস্য ড. মারিয়া লনিকজাক বলেন, নতুন যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে তাতে দেখা গেছে, গবেষকরা যা ভেবেছেন তার চেয়ে অনেক দ্রুত এ সব মশার বিবর্তন ঘটছে। এক জাতের মশা মারার জন্য যে কার্যক্রম ভালো ভাবে কাজ করে দুর্ভাগ্যক্রমে তা অন্য জাতের মশার ওপর কাজ করে না। তিনি বলেন, মশা নিধনের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম সফল করতে হলে এখন এ সব মশার জিনের গঠনে কী কী পরিবর্তন ঘটছে তা দ্রুত বের করতে হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ দু'জাতের মশাকে 'এম' এবং 'এস' নাম দেয়া হয়েছে। তাদের দেহের বিশেষ কোনো স্থানের জিনে পরিবর্তন আসেনি বরং সারা দেহে যে ডিএনএ ছড়িয়ে রয়েছে সেগুলোতে পরিবর্তন এসেছে। জিনের গঠন এভাবে বদলে যাওয়ার প্রভাব দেখা দেবে এ দুই মশার বিকাশ, খাদ্য অভ্যাস ও প্রজননের ক্ষেত্রে । এ দুই মশার বিবর্তন আলাদভাবে হয়েছে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
এ সব মশার ক্ষেত্রে কেন এ রকম পরিবর্তন এসেছে তাও খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা । তারা মনে করছেন, মশার শুককীট যেখানে বেড়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশগত ভিন্নতা, মশার দেহে সংক্রমণ ঘটায় এমন সব উপাদানের ভিন্নতা এবং মশাকে শিকার করে প্রকৃতিতে এমন শত্রুর ভিন্নতার মতো কারণসহ নানা কারণে মশার দেহে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।
'অ্যানোলিস গাম্বিয়া' নিয়ে এ গবেষণার সহকারী প্রধান ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক জর্জ ক্রিস্টোফাইডস বলেন, ম্যালেরিয়া একটি প্রাণঘাতী অসুখ। বিশ্বে প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ এ রোগে ভোগে। বিশেষ করে আফ্রিকার শিশু মৃত্যুর ক্ষেত্রে এ রোগের মারাত্মক ভূমিকা রয়েছে। প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর মধ্যে একটি ম্যালেরিয়ার কারণে ঘটে। তিনি আরো বলেন, রোগবাহী মশা নিয়ন্ত্রণ করাই হলো ম্যালেরিয়া জ্বর ঠেকানোর সেরা উপায় । মশার গঠন বোঝার যে গবেষণা চলছে তার উদ্দেশ্য হলো এমন এক উপায়খুঁজে বের করা যেন এ সব মশা মানুষের মধ্যে ম্যালেরিয়া ছড়াতে না পারে ।
সূত্রঃ ইন্টারনেট

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন