হাজার বছরের বিস্ময় ইমাম খোমেনী (রঃ)

হাজার বছরের বিস্ময় ইমাম খোমেনী (রঃ) কত যে তারার মহাসমুদ্র কেটে কেটে অবশেষে নয়া আফতাব জাগলো ঘুমের দেশে নীল ঝরোকায় রূপালী ঝলক-বিছানায় জেগে দেখি এ কোন্ ইমাম ডাকছে আমায় একি! রঙীন মিনারে আজান হেঁকেছে এ কোন্ মুয়াজ্জিন! দুয়ারে আমার নওল আশার হাসছে নতুন দিন

হাজার বছরের বিস্ময় ইমাম খোমেনী (রঃ)

কত যে তারার মহাসমুদ্র কেটে কেটে অবশেষে
নয়া আফতাব জাগলো ঘুমের দেশে
নীল ঝরোকায় রূপালী ঝলক-বিছানায় জেগে দেখি
এ কোন্ ইমাম ডাকছে আমায় একি!
রঙীন মিনারে আজান হেঁকেছে এ কোন্ মুয়াজ্জিন!
দুয়ারে আমার নওল আশার হাসছে নতুন দিন!
হ্যাঁ! আমরা একজন মহান ইমামের কথা বলছি । পবিত্র ইসলাম ধর্ম নবী-রাসূল ও পবিত্র ইমামগণের পরও বিশ্বকে এমন কয়েকজন ইমাম বা মহাপুরুষ ও সংস্কারক উপহার দিয়েছে যে তারা প্রকৃত ইসলামের পুনর্জাগরণের মাধ্যমে মানব ইতিহাসের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়েছেন বলে মনে করা হয় । বিশ্ব ও ইসলামের ইতিহাসের হাজার বছরের বিস্ময় হিসেবে বিবেচিত এমনই এক চিরস্মরণীয় মহাপুরুষ হলেন মরহুম ইমাম আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী (রঃ) । জনগণের সমর্থন নিয়ে ইসলামী আইন ও ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে আধুনিক যুগেও যে একটি জনকল্যামূলক রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব এবং খালি হাতেই পরাশক্তিগুলোর প্রভাবকে নিজ দেশ থেকে প্রায় পুরোপুরি নির্মূল করা যে সম্ভব - তা দেখিয়ে গেছেন ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সফল রূপকার মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ) । যে যুগের বস্তুবাদী ও জড়বাদী আধুনিক শিক্ষায় ধর্মকে মনে করা হয় সেকেলে, পশ্চাদপদ, অপ্রগতিশীল ও নিছক ব্যক্তিগত চর্চার বিষয় সে যুগে তিনি ইসলামকে নিয়ে আসেন বিশ্ব রাজনীতির মূল আলোকমঞ্চে এবং এর ফলে হতচকিত ও আতঙ্কিত বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদ বিশ্ব সভ্যতা হিসেবে ইসলামের পুনরুত্থান ঠেকানোর জন্যে ইসলামকে তাদের প্রধান শত্রু হিসেবে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিতে ও সে অনুযায়ী তাদের বিশ্ব-কার্যক্রমকে ঢেলে সাজাতে বাধ্য হয়েছে ।
সমকালীন বিশ্বে বা অন্ততঃ এক হাজার বছরের মধ্যে মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ)'র সমকক্ষ কাউকে দেখা যায় না । কারণ, গত এক হাজার বছরে অনেক ইসলামী সংস্কারক শুধু চিন্তা বা জ্ঞানগত ক্ষেত্রে বা সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখেছেন, আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনে অবদান রাখলেও একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মতো বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করতে পারেননি । ইমাম খোমেনী (রঃ) ছিলেন একাধারে একজন বড় দার্শনিক, রাষ্ট্রনায়ক, বিশ্ব রাজনীতিজ্ঞ, সমরবিদ, শ্রেষ্ঠ ইসলামী আইনজ্ঞ ও মুজতাহিদ, অনন্য সংগঠক, আপোসহীন সংগ্রামী, শ্রেষ্ঠমানের শিক্ষক, অনুপম লেখক, সম্মোহনকারী বক্তা, আধ্যত্মিক কবি এবং সর্বোপরি মুসলিম জাতিগুলোকে উজ্জ্বীবনকারী অলৌকিক ক্যারিজম্যাটিক ও আধ্যাত্মিক নেতা । সমকালীন যুগে বা হাজার বছরের ইতিহাসে কোনো মুসলিম মনীষীর মধ্যে এতগুলো সফল দিক বা গুণের সমাবেশ দেখা যায়নি ।
ইরানে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে আধুনিক যুগে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাটা ছিল একটি কল্পনা বা স্বপেড়বর বিষয় । ইমাম খোমেনী ( রঃ) বাস্তবে এ অসাধ্য সাধন করেছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি প্রবল বিক্রমে দশ বছর ধরে এ স্বাধীন ইসলামী রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বের ইসলাম প্রেমিক মানুষের মনে আধুনিক যুগেও আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের উপযোগিতা ও কার্যকারিতাকে প্রমাণ করেছেন । একজন আধ্যত্মিক সাধক ও খোদাভীরু বা পরহেহজগার আলেম হিসেবে জনপ্রিয় ইমাম খোমেনী কখনও নেতৃত্বের পিছনে ছুটেননি বরং মজলুম মানুষের প্রতি তাঁর অপরিসীম ভালোবাসা, দেশ ও জাতির স্বার্থে সময়োপযোগী কার্যক্রম, দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্ব, ইসলামের প্রতি অবিচল আস্থা, আত্মবিশ্বাস এবং যুগোপযোগী অসাধারণ জ্ঞান ও যোগ্যতার কারণেই তিনি কোটি কোটি মজলুম জনতাসহ মুক্তিকামী মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা এবং বিশেষ করে ইসলামী ইরানের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছিলেন । এটা ঠিক যে, মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ) যে সফল বিপ্লব ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা তার পেছনে অতীতের মহান মুসলিম দার্শনিক, মুজতাহিদ এবং সংগ্রামী আলেমগণের অবদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বা পটভূমি হিসেবে কাজ করেছে, কিন্তু ইমাম খোমেনী (রঃ)'র বড় অবদান হলো তিনি অতীত আন্দোলন ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রক্রিয়াকে আরো গতিশীল করে তাকে পূর্ণতা দিতে পেরেছেন এবং ইরানের ইসলামী রাষ্ট্র ও ভবিষ্যত বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের জন্যে শক্তিশালি ভিত্তি রচনাসহ তাঁর সাফল্যগুলোকে ধরে রাখা ও জোরদারের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনাও দিয়ে গেছেন । তাই যতই দিন যাচ্ছে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর জন্যে তাঁর অবদানগুলো আরো স্পষ্ট হয়ে উঠছে ।
অনেকে মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ)'র রাজনৈতিক সাফল্যটাকেই বড় করে দেখেন। এ প্রসঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ হামিদ আলগার বলেছেনঃ "ইমামের বিপ্লব শুধু রাজনৈতিক ও কৌশলগত ব্যাপার ছিলনা, তাঁর বিপ্লব আধ্যাত্মিকতার এক অন্তর্নিহিত শক্তির মাধ্যমেও নিখুঁত ও নির্ভুলভাবে পরিচালিত হয়েছে । ইমাম খোমেনী ১৯৭৯ সালের ফেব্র"য়ারী মাসে দেশে ফিরে আসলেন । কিন্তু তিনি সাথে করে কোনো সম্পদ নিয়ে এলেন না । কোনো রাজনৈতিক দলও তিনি গঠন করেননি । কোনো গেরিলা যুদ্ধও তিনি পরিচালনা করেননি । কোনো বিদেশী শক্তির সাহায্যও তিনি নিলেন না । অথচ এরই মধ্যে তিনি ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনের তর্কাতীত নেতৃত্বে সমাসীন হলেন । "
মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ ) যখন ‘প্রাচ্যও নয় ও পাশ্চাত্যও নয় ইসলামই শ্রেষ্ঠ'- এ ঘোষণাকে নবগঠিত ইসলামী ইরানের নীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন, তখন অনেকেই বিস্ময়ে অভিভূত হয়েছিল এবং এ রাষ্ট্র টিকবে কিনা তা নিয়েও অনেকে সন্দেহ করেছিল । কিন্তু প্রতিষ্ঠার দই দশকেরও বেশি সময় পর আজো ইসলামী ইরান আগের চেয়েও অনেক শক্তিশালী হয়ে সাম্রাজ্যবাদের প্রধান দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে আছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ইমাম খোমেনী (রঃ)'র সবচেয়ে বড় অবদান হলো তিনি ইসলাম ধর্ম ও রাজনীতিকে বিচ্ছিনড়ব করে রাখার সাম্রাজ্যবাদী নীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং মুসলিম উম্মাহকে তাদের প্রধান শত্রু কে তা চিনিয়ে দিয়েছিলেন । মরহুম ইমাম বলেছিলেনঃ আমরা বিশ্বে ইহুদিবাদ, পুঁজিবাদ ও কমিউনিজমের পঁচা বিষমূলগুলোকে জ্বালিয়ে দিতে চাই । আমরা এসব ব্যবস্থাকে নাস্তানাবুদ করবো এবং
রাসূল (সাঃ)'র নেজামে ইসলামকে দাম্ভিক কুফুরি বিশ্বে ছড়িয়ে দিব । যখন বিশ্বের অনেক তথাকথিত ইসলামী দলও আমেরিকাকে মুসলমানদের বন্ধু মনে
করতো , তখন ইমাম খোমেনী (রঃ) বলেছিলেনঃ আমেরিকা ও রাশিয়া উভয়েই ইসলামের শত্রুতায় একে অপরের চেয়ে বড় । ইসরাইল মুসলমানদের আরো নিকৃষ্ট শত্রু । তিনি আরো বলেছিলেনঃ আমাদের অর্থাৎ মুসলমানদের যাবতীয় দুঃখ-দুর্দশা আমেরিকা ও ইসরাইলেরই সৃষ্টি । আর ইসরাইল এসেছে আমেরিকার ঔরস থেকে । তিনি আমেরিকাকে বৃহৎ দূর্বৃত্ত বলে অভিহিত করতেন । ইমাম খোমেনী (রঃ) মুসলমানদেরকে শিয়া-সূনড়বীর বিভেদ ও জাতীয়তাবাদের দ্বন্দ্ব থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন : যারা এসব নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় তারা আসলে সাম্রাজ্যবাদের দালাল এবং তারা মুসলমানদেরকে বিভক্ত করতে চায় । এভাবে তিনি ইসলামী ঐক্য গড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ।
সত্যিকার ইসলামকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরার জন্যে ইমাম খোমেনী (রঃ)'র সূচিত ইসলামী বিপ্লব বাংলাদেশসহ বিশ্বের ইসলামী জাগরণগুলোকে তা কতোটা আন্দোলিত ও অনুপ্রাণিত করেছে সে বিষয়ে বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও আইনজীবী এডভোকেট সাদ আহমদ বলেছেনঃ তিনি অর্থাৎ ইমাম খোমেনী (রঃ) দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে মুসলমানরা নিজেরাই শক্তিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে পারে, মুসলমানদেরকে পূবের দিকেও তাকানোর দরকার নেই, পশ্চিমের দিকেও তাকানোর দরকার নেই । মুসলমানরা যদি শুধু ইসলামকে আঁকড়ে থাকে, তাহলে তারা এসব বাধা বিপত্তিকে অতিক্রম করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে পারে এবং ইসলামের পতাকা উড়াতে পারে । এই যে মনোভাব তিনি সৃষ্টি করেছিলেন, তার ফলে আজকে গোটা বিশ্বের বিভিনড়ব জায়গায় আমরা দেখছি, মুসলমানরা তাদের হারানো গৌরব ফিরে পাবার জন্যে চেষ্টা করছে । এটা সম্পূর্ণ তাঁরই অবদান এবং আজকের বাংলাদেশের আনাচে কানাচে যে আন্দোলনের সূর ধ্বনিত হচ্ছে এবং ইসলামী জীবন প্রতিষ্ঠার জন্যে যে চেষ্টা চলছে, এটাও একই কারণে সম্ভবপর হচ্ছে । মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ) যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলতেন তা হলো প্রকৃত ইসলাম ও মোহাম্মদী ইসলাম, আমেরিকা ও সাম্রাজ্যবাদীদের পছন্দের ইসলাম নয় । যে ইসলাম সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেনা, অন্যায়-অবিচার , জুলুম ও শোষনের বিরুদ্ধে বা রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেনা, আমেরিকার কাছে সে ইসলামই পছন্দনীয় ।
যুগে যুগে নবী-রাসূল ও ইমামগণ যেভাবে রাজা-বাদশাহদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, যেমনিভাবে ইমাম হোসইন (আঃ) এজিদের রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, তেমনি ইমাম খোমেনী (রঃ)ও হোসাইনী চেতনা নিয়ে সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে জনগণকে উদ্ব্দ্ধু করেছিলেন । আর এ জন্যেই তাঁর বিপ্লব সফল হয়েছিল । মহানবী (সঃ)'র আহলে বাইতের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শাহাদতের পবিত্র ধারা ও পরবর্তী শাহাদত কাহিনী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইরানী জাতির অন্তরে ছাই চাপা আগুনের মতো সুপ্ত ছিল। ইমাম খোমেনী (রঃ)'র আহবানে তাদের অন্তরের সে আগুন অনির্বাণ বিপ্লব শিখা হয়ে জ্বলে ওঠে এবং তার সামনে কায়েমী স্বার্থ, মানুষের প্রভুত্ব, সামন্তবাদী মানসিকতা, রাজকীয় বিলাস ও শোষণ প্রক্রিয়ার একটি রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙে চুরমার হয়ে যায় । মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ) বলতেন, মুসলিম দেশগুলোতে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা সাম্রাজ্যবাদীদের ক্রীড়নক বা শিখন্ডি শাসকদের উৎখাত না করা পর্যন্ত মুসলিম জাতিগুলোর মুক্তি আসবেনা ।
আসলে একটি জাতির মধ্যে আমূল পরিবর্তন আনা এবং জাতির সাংস্কৃতিক মানস থেকে শুরু করে তার অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য সবক্ষেত্রে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গীকে প্রতিষ্ঠার জন্যে যে ধরনের যোগ্যতা ও জ্ঞান দরকার তার সবটুকুই ইমাম খোমেনী (রঃ)'র মধ্যে দেখা যায় । বিপ্লবের পরে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিই এর প্রমাণ । ইসলাম থেকে উৎসারিত ইমামের দিক নির্দেশনার ফলে ইরান থেকে সুদ, জুয়া, মদ, নগ্নতা-অশ্লীলতা, নাইট ক্লাব, বেশ্যাবৃত্তি, সন্ত্রাস প্রভৃতি নির্মূল হয়ে যায় । অবশ্য ইরানের মহিলারা হিজাব বা পর্দাবৃত হলেও তাদেরকে শুধু ঘরের মধ্যেই থাকতে বাধ্য করা হয়নি । বরং ইরানের মহিলারা হিজাব পরে অফিস আদালত ও শিক্ষাক্ষেত্রে উপস্থিত হতে পারছেন । ইরানে বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রীদের সংখ্যাই বেশী । রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গণভোটের মাধ্যমে গৃহীত সংবিধান অনুযায়ী ইসলাম বিরোধী ও ধর্মনিরপেক্ষ দল নিষিদ্ধ করা হয় । সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা হয় । ইরানে ইসলামী বিপ্লব হবার পর অবহেলিত গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সরবরাহের মতো অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অন্যান্য অনেক উন্নতি হয়েছে এবং প্রথমে কৃষিখাতে ও পরে শিল্প খাতে দেশকে স্বনির্ভর করার উদ্যোগ নেয়া হয় ।
শোষক পুঁজিপতিদের কল-কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং তেল সম্পদসহ রাষ্ট্রের অন্যান্য সম্পদ ভান্ডারকে বঞ্চিত ও মজলুম জনগণের কল্যাণের জন্যে উন্মুক্ত করা হয় । আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ইসলামী ইরান ফিলিস্তিনী জাতিসহ বিশ্বের নির্যাতিত জাতিগুলোকে সমর্থনের নীতি গ্রহণ করায় বিশ্বব্যাপী ইরানের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে । আর এ সব কিছুর জন্যেই ইসলামী ইরান মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ)'র দূরদর্শী ও বিচক্ষণ দিক নির্দেশনার কাছে ঋণী । তাই বিশ্বের মুক্তিকামী জাতি ও সচেতন মানুষ মনে করেন, প্রত্যেক জাতির মধ্যেই যদি মরহুম ইমাম খোমেনী (রঃ)'র মতো অথবা অন্ততঃ তাঁর কাছাকাছি পর্যায়ের যোগ্য নেতা আবির্ভূত হতেন, তাহলে এ পৃথিবী আজ বেহেশতে পরিণত হতো । আজ হোক কাল হোক বিশ্বের সব মুক্তিকামী জাতির নেতৃবৃন্দ ইমাম খোমেনী (রঃ)'র পথ অনুসরণ করে তাদের নিজ নিজ জাতিকে মুক্তি ও সৌভাগ্যের পথে এগিয়ে নিবেন, এটাই আজ মজলুম মানবতার প্রত্যাশা ।
সূত্রঃ ইরান বাংলা রেডিও

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন